আইনশাস্ত্র
আইনশাস্ত্র আইনের তত্ত্ব এবং দর্শন নিয়ে আলোচনা করে। এর মূল লক্ষ্য হলো আইন কী এবং আইন কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা। এক্ষেত্রে সামাজিক সম্পর্কগুলোকে কীভাবে আইন বুঝে, এবং আইনের মধ্যে নিহিত মূল্যবোধগুলো কী - এই ধরনের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। আইনশাস্ত্রের আলোচনাগুলো মূলত দার্শনিক হলেও এতে সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, রাজনীতি এবং অর্থনীতি বিষয়ক দৃষ্টিকোণও যুক্ত হয়ে থাকে। আইনশাস্ত্রকে আইনতত্ত্ব, আইনবিদ্যা, আইনবিজ্ঞান, ব্যবহারবিদ্যা, ব্যবহারতত্ত্ব, ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।
আধুনিক আইনশাস্ত্রের যাত্রা শুরু হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে প্রাকৃতিক আইন, বেসামরিক আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রাথমিক নীতিগুলোর ভিত্তিতে। আইনের দর্শনকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: বিশ্লেষণমূলক পদ্ধতিতে যে বিশ্বাস, এবং আইন-সম্পর্কিত দার্শনিক চিন্তাধারা যেগুলো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে চায়।[১]
আইনের সমসাময়িক দর্শন আইন ও আইনি ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর পাশাপাশি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইনের বিষয়টিও নিয়ে কাজ করে, এবং যে বৃহত্তর রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আইন বিদ্যমান সেটার সাথেও এর সম্পর্ক স্থাপন করে। প্রাচীন প্রাকৃতিক আইন মতবাদ বিশ্বাস করে যে আইনপ্রণেতাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ রাখতে কিছু যুক্তিভিত্তিক ও উদ্দেশ্যমূলক সীমা রয়েছে। আইনের ভিত্তি যুক্তির মাধ্যমে পাওয়া যায়, এবং মানুষের তৈরি আইনগুলোর শক্তি এই প্রাকৃতিক আইন থেকেই আসে। বিশ্লেষণধর্মী আইনশাস্ত্র প্রাকৃতিক আইনের মতো, 'আইন কী' এবং 'আইন কী হওয়া উচিত' - এই দুটি প্রশ্নের মিশ্রণকে প্রত্যাখ্যান করে। আইনতত্ত্বের এই শাখা মনে করে, আইনকে বর্ণনা করার সময় নিরপেক্ষতা ও সঠিক ভাষার ব্যবহার করা জরুরী। আইন সংক্রান্ত ধারণার মধ্যে 'আইনি বাস্তববাদ' এই নীতির সাথে যুক্ত, যা তর্ক করে যে বাস্তব জগতে আইনের প্রয়োগই আইনকে সংজ্ঞায়িত করে। আইনপ্রণেতা, আইনজীবী এবং বিচারকরা যেভাবে আইনকে প্রয়োগ করেন, আইন ততটুকুই শক্তিশালী। পরীক্ষামূলক আইনশাস্ত্রের (experimental jurisprudence) থেকে আলাদাভাবে, প্রাকৃতিক আইন এবং বিশ্লেষণমূলক আইনশাস্ত্র দুটোই আসলে দার্শনিক বিশ্লেষণ-প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। নীতি-নির্ধারণী আইনতত্ত্ব হল আইন সংক্রান্ত 'মূল্যায়নমূলক' তত্ত্ব। আইনের উদ্দেশ্য কী সেটি বা আইনে কোন নৈতিক বা রাজনৈতিক তত্ত্বের ভিত্তি তৈরি হবে, এই প্রশ্নগুলো নিয়ে এটি কাজ করে। এটি শুধু “আইন কী?” এই প্রশ্নের উত্তরই খোঁজে না, বরং এই উত্তর নির্ধারণেও মনোযোগী হয় যে আইনের যথাযথ কাজ কী হওয়া উচিত, কোন ধরণের কাজে আইনি শাস্তি প্রযোজ্য হওয়া উচিত, এবং কী ধরনের শাস্তির অনুমতি দেওয়া উচিত।[২][৩][৪]
শব্দতত্ত্ব
[সম্পাদনা]ইংরেজি "Jurisprudence" শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ "iurisprudentia" থেকে। "Iuris" হল "ius" শব্দের রূপকার (genitive form), যার অর্থ আইন। আর "prudentia" শব্দের অর্থ হল জ্ঞান বা বিচক্ষণতা (এছাড়া দূরদর্শিতা, বিবেচনা ইত্যাদিও বোঝায়)। এটি সাধারণত ব্যবহারিক বিষয়ে সঠিক বিচার, বুদ্ধিমত্তা এবং সতর্কতা বোঝায়। ১৬২৮ সালে প্রথম এই শব্দটি লিখিত ইংরেজিতে দেখা যায়। সম্ভবত ফরাসি "jurisprudence" শব্দটির মাধ্যমেই এটি ইংরেজিতে এসেছে, যেটি আরেকটু আগে থেকেই ব্যবহৃত হত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র থেকে প্রাচীন আইনশাস্ত্র বা বিচার দর্শনের সূচনা হয়। এর উদাহরণ হল আপস্তম্ব এবং বৌদ্ধায়নের ধর্মসূত্র।[৫]
প্রাচীন চীনে, তাওবাদী, কনফুসিয়াসবাদী এবং আইনবাদী (Legalists) সবাই আইনশাস্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব নিয়ে এসেছিলেন।[৬]
প্রাচীন রোমের বিচার দর্শন মূলত "periti" দের হাত ধরে সূচিত হয়েছিল। এরা "jus mos maiorum" বা মৌখিক আইন ও রীতিনীতির বিশেষজ্ঞ ছিলেন। "Praetors" (ম্যাজিস্ট্রেটবিশেষ) "edicta" বা বার্ষিকভাবে ঘোষিত অপরাধসমূহ বিচার করে আইনের মূল কাঠামো তৈরি করেছিলেন। আর বিশেষ পরিস্থিতিতে "edicta" তে সংযোজন করা হত। "Iudex" (মূলত একজন ম্যাজিস্ট্রেট, পরবর্তীতে যেকোনো নির্দিষ্ট মামলার বিচারক হিসেবে নিযুক্ত বেসরকারি ব্যক্তি) মামলার তথ্য অনুসরণ করে ফলাফল দিতেন।
"Iudex" এর রায় মূলত প্রচলিত রীতিনীতির সরল ব্যাখ্যা হিসেবেই দেওয়া হত। কিন্তু খুব শীঘ্রই তারা প্রচলিত রীতিনীতিকে সামাজিক প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সমান্তরালভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। এই প্রক্রিয়ায় আইন ও আইনগত ধারণা (institutiones) বিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু মূল কাঠামো রয়ে গেল অক্ষুণ্ণ। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে "praetors" এর স্থান নেন "prudentes" নামক একটি অধর্মীয় শিক্ষিত শ্রেণি। এই পদে আসীন হবার জন্য যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা প্রমাণ করতে হত।
রোমান সাম্রাজ্যের সময়, আইনের স্কুল তৈরি হতে শুরু করে এবং আইন চর্চা আরও একাডেমিক আঙ্গিক পায়। প্রাথমিক রোমান সাম্রাজ্য থেকে তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত বিভিন্ন পন্ডিতদের গ্রুপ (Proculians ও Sabinians সহ) বিপুল পরিমাণ সাহিত্যকর্ম তৈরি করেন। সেই প্রাচীন যুগে এধরণের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছিল অভূতপূর্ব। তৃতীয় শতাব্দীর পর থেকে আইনশাস্ত্রে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব বাড়ে এবং খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ রচনা তৈরি হয় না। কিন্তু পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যে (পঞ্চম শতাব্দী) আইন বিষয়ক গবেষণা আবার গভীরভাবে চালু হয়। এই সাংস্কৃতিক আন্দোলনেরই ফসল জাস্টিনিয়ানের "Corpus Juris Civilis"।
প্রাকৃতিক আইন
[সম্পাদনা]সাধারণ অর্থে, প্রাকৃতিক আইন তত্ত্বের সাথে "প্রকৃতির অবস্থা" (state-of-nature law) ও ভৌতবিজ্ঞানের নিয়মের অনুরূপ একটি সার্বজনীন আইনের ধারণার তুলনা করা যেতে পারে। প্রাকৃতিক আইনকে প্রায়শই ইতিবাচক আইনের বিপরীতে রাখা হয়, যেখানে ইতিবাচক আইনকে মানুষের কাজ ও মতামতের ফসল হিসেবে বোঝানো হয়। প্রাকৃতিক আইন অধ্যয়নের আরেকটি প্রভাবশালী দৃষ্টিভঙ্গি হলো- মানবসৃষ্ট আইনগুলো অবশ্যই যুক্তিগ্রাহ্য কারণ বা নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হতে হবে। প্রাকৃতিক আইনের অবস্থান বিষয়ে দুটি পাঠ রয়েছে।
- দৃঢ় প্রাকৃতিক আইন: এই ধারণাটি মনে করে যে যদি কোনও মানবসৃষ্ট আইন যুক্তিগ্রাহ্য কারণের উপর ভিত্তি করে তৈরি না হয়, তাহলে সেটি মূলত আইনই নয়। এটাকেই অসম্পূর্ণভাবে বিখ্যাত প্রবাদটি প্রতিফলিত করে: lex iniusta non est lex (অন্যায় আইন আসলে আইনই নয়)।
- দুর্বল প্রাকৃতিক আইন: এই ধারণাটি বলে যে যদি কোনও মানবসৃষ্ট আইন যুক্তিগ্রাহ্য কারণের উপর ভিত্তি করে তৈরি না হয়, তাহলেও সেটিকে ‘আইন’ বলে গণ্য করা যায়, তবে এটিকে ত্রুটিপূর্ণ আইন হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
প্রাকৃতিক আইনের ভিত্তি হল এই ধারণা যে, মানুষের তৈরি আইন ব্যবস্থার বাইরেও একটি নৈর্ব্যক্তিক নৈতিক ধারা বিদ্যমান। কী সঠিক বা কী ভুল সেটি কারো দৃষ্টিভঙ্গি বা স্বার্থের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। আধুনিক প্রাকৃতিক আইন সিদ্ধান্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পণ্ডিত জন ফিনিস বলেছেন, "অন্যায় আইন আসলে আইনই নয়" প্রবাদটি আসলে প্রথাগত ধর্মতাত্বিক (Thomist) অবস্থানের সঠিক ব্যাখ্যা নয়।
বিশ্লেষণমূলক আইনশাস্ত্র
[সম্পাদনা]বিশ্লেষণমূলক বা ব্যাখ্যামূলক আইনশাস্ত্র হল বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলার একটি নিরপেক্ষ ও বর্ণনামূলক পদ্ধতি। এটি একটি দার্শনিক ধারণা, যা প্রাকৃতিক আইনের (natural law) "আইন কী" এবং "আইন কী হওয়া উচিত" - এই দুটি বিষয়কে মিশ্রিত করা প্রত্যাখ্যান করে। ডেভিড হিউম তাঁর A Treatise of Human Nature গ্রন্থে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আমরা যখন "পৃথিবীটা কী" তা বর্ণনা করি, সেই বর্ণনা থেকেই সহজেই "আমাদের এই এই কাজ করা উচিত" - এই যুক্তিতে পৌঁছে যাই। অথচ খাঁটি যুক্তির ভিত্তিতে, আমরা কেবল "কোনো কিছু এমনই আছে" এই কারণে "আমাদের অমুক করতেই হবে" সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি না। সুতরাং, বিশ্ব কেমন তা বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যা করাকে অবশ্যই "কী করা উচিত" এই ধরনের নিয়মতান্ত্রিক (normative) এবং মূল্যবোধগত প্রশ্নগুলির থেকে কঠোরভাবে আলাদা বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।[৭]
বিশ্লেষণমূলক আইনশাস্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি হল: "আইন কী?"; "বিচারব্যবস্থা কী?"; "আইন এবং ক্ষমতা/সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক কী?"; এবং "আইন এবং নৈতিকতার মধ্যে সম্পর্ক কী?" বিশ্লেষণমূলক আইনশাস্ত্রে "লীগাল পজিটিভিজম" (আইনতাত্ত্বিক প্রত্যক্ষবাদ) হল প্রভাবশালী তত্ত্ব, যদিও এই তত্ত্বের ব্যাখ্যা নিয়ে অনেক সমালোচক রয়েছেন যারা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন।
আদর্শবাদী বিচারব্যবস্থা
[সম্পাদনা]"আইন কী?" এই প্রশ্নের পাশাপাশি আইনের দর্শন আইনের আদর্শগত বা "মূল্যায়নমূলক" তত্ত্বগুলো নিয়েও আলোচনা করে। আইনের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কী? কোন নৈতিক বা রাজনৈতিক তত্ত্বগুলো আইনের ভিত্তি তৈরি করে? আইনের যথাযথ কাজ কী? কী ধরনের কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া উচিত এবং কোন ধরনের শাস্তি যুক্তিযুক্ত? ন্যায়বিচার কী? আমাদের কী কী অধিকার আছে? আইন মান্য করার কি কোন কর্তব্য আছে? আইনের শাসনের মূল্য কী? নিচে কয়েকটি ভিন্ন ধারার দর্শন ও তার নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদদের আলোচনা করা হলো।
সদ্গুণভিত্তিক বিচারব্যবস্থা
[সম্পাদনা]সমসাময়িক সদ্গুণ নীতিশাস্ত্রের মতো, গুণতাত্ত্বিক নৈতিক তত্ত্বগুলো নৈতিকতায় চরিত্রের ভূমিকাকে গুরুত্ব দেয়। সদ্গুণভিত্তিক বিচারব্যবস্থা হলো এই মত যে, আইনকে নাগরিকদের মধ্যে সদ্গুণ চরিত্রের বিকাশ ঘটাতে সহায়তা করা উচিত। ঐতিহাসিকভাবে, এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রধানত অ্যারিস্টটল বা টমাস অ্যাকুইনাসের সাথে যুক্ত ছিল। সমসাময়িক সদ্গুণভিত্তিক বিচারব্যবস্থা সদ্গুণ নীতিশাস্ত্রের ওপর দার্শনিক কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত।
কর্তব্যবাদ
[সম্পাদনা]কর্তব্যবাদ হলো "কর্তব্য বা নৈতিক বাধ্যবাধকতার তত্ত্ব"। দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট আইনের একটি প্রভাবশালী কর্তব্যবাদী তত্ত্ব প্রণয়ন করেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আমাদের যে কোনও নিয়ম অনুসরণ করতে হবে তা অবশ্যই সার্বজনীনভাবে প্রযোজ্য হতে হবে। আমাদের অবশ্যই এমন হওয়া উচিত যে নিয়মটি সকলে অনুসরণ করুক। আইনি দার্শনিক রোনাল্ড ডওয়ার্কিনের কাজের মধ্যে একটি সমসাময়িক কর্তব্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায়।[৮]
উপযোগবাদ
[সম্পাদনা]উপযোগবাদ হলো সেই মতবাদ যা বলে যে আইনগুলো এমনভাবে তৈরি করা উচিত যাতে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের জন্য সর্বোত্তম ফল পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকভাবে, আইন সম্পর্কে উপযোগবাদী চিন্তাভাবনা দার্শনিক জেরেমি বেন্থামের সাথে যুক্ত হয়েছে। জন স্টুয়ার্ট মিল বেন্থামের একজন ছাত্র ছিলেন এবং উনিশ শতক জুড়ে উপযোগবাদী দর্শনের মশাল বাহক ছিলেন। সমসাময়িক আইনতত্ত্বে, উপযোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রায়শই আইন ও অর্থনীতিতে যারা কাজ করেন সেসকল পণ্ডিতরা সমর্থন করেন।[৯]
জন রলস
[সম্পাদনা]জন রলস ছিলেন একজন আমেরিকান দার্শনিক; হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক দর্শনের অধ্যাপক; এবং A Theory of Justice (১৯৭১), Political Liberalism, Justice as Fairness: A Restatement, এবং The Law of Peoples-এর লেখক। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইংরেজি-ভাষী রাজনৈতিক দার্শনিক হিসেবে তাকে ব্যাপকভাবে বিবেচনা করা হয়। আইনবিচার বিষয়ে তাঁর তত্ত্বটি "মৌলিক অবস্থান" নামক একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে। এটি আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে যে, আমরা যদি "অজ্ঞতার পর্দার" আড়ালে থাকতাম, তবে আমাদের সমাজের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রিত করার জন্য আমরা কোন ন্যায়বিচারের নীতিগুলো বেছে নিতাম। কল্পনা করুন যে আমরা জানি না আমরা কে—আমাদের বর্ণ, লিঙ্গ, সম্পদ, মর্যাদা, শ্রেণি বা অন্য কোনও বৈশিষ্ট্য—যাতে আমরা আমাদের নিজেদের পক্ষে পক্ষপাতদুষ্ট না হই। রলস এই "মৌলিক অবস্থান" থেকে যুক্তি দিয়েছিলেন যে আমরা সবার জন্য ঠিক একই রাজনৈতিক স্বাধীনতা বেছে নেব, যেমন বাক-স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার ইত্যাদি। এছাড়াও আমরা এমন একটি ব্যবস্থা বেছে নেব যেখানে শুধুমাত্র অসমতা বিদ্যমান কারণ সেটি সকলের অর্থনৈতিক মঙ্গলের জন্য পর্যাপ্ত উদ্দীপনা তৈরি করে, বিশেষ করে দরিদ্রতমদের জন্য। এটাই হলো রলসের বিখ্যাত "পার্থক্য নীতি"। এই অর্থে ন্যায়বিচার হলো সততা, যেখানে পছন্দের মৌলিক অবস্থানের সততা সেই অবস্থানে নির্বাচিত নীতিগুলোর সততা নিশ্চিত করে।
আইনের দর্শনের প্রতি আরও অনেক আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, যার মধ্যে সমালোচনামূলক আইন অধ্যয়ন ও আইনের মুক্তিবাদী তত্ত্বগুলি অন্তর্ভুক্ত।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Garner 2009, Jurisprudence entry।
- ↑ See H L A Hart, 'Positivism and the Separation of Law and Morals' (1958) 71 Harv. L. Rev. 593
- ↑ Soper, "Legal Positivism", Cambridge Dictionary of Philosophy
- ↑ Sommers, Roseanna (২০২১-০৭-২৩)। "Experimental jurisprudence"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। 373 (6553): 394–395। আইএসএসএন 0036-8075। এসটুসিআইডি 236179587 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1126/science.abf0711। পিএমআইডি 34437107|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2021Sci...373..394S। - ↑ Katju, Markandey (২৭ নভেম্বর ২০১০)। "Ancient Indian Jurisprudence" (পিডিএফ)। Banaras Hindu University। ৪ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ Chang, Wejen (Spring ২০১০)। "Classical Chinese Jurisprudence and the Development of the Chinese Legal System"। Tsinghua China Law Review। 2 (2)। ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯।
- ↑ David Hume, A Treatise of Human Nature (1739) Etext ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ আগস্ট ২০০৬ তারিখে
- ↑ Webster's New World Dictionary of the American Language, p. 378 (2d Coll. Ed. 1978).
- ↑ Grechenig ও Gelter 2008, পৃ. 295–360।