বিষয়বস্তুতে চলুন

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাজনীতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাজনীতি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে একটি একক কম্যুনিস্ট পার্টি অব চায়না দ্বারা পরিচালিত হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছে দলটির সাধারণ সম্পাদক।[] গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অভ্যন্তরে রাজ্যক্ষমতা থাকে কম্যুনিস্ট পার্টি, মন্ত্রি পরিষদ ও তাদের প্রাদেশিক ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের হাতে। কম্যুনিস্ট পার্টি অব চায়না অভ্যন্তরীণ রেফান্স  [参考资料 (出版物)] ব্যবহার করে মতভেদ যাচাই ও সামাল দেয়। [][] ২০১৩ সালে শি-লি প্রশাসন কর্তৃক ডকুমেন্ট নং ৯ প্রচারিত হয়, যাতে করে কম্যুনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পাশ্চাত্য প্রভাবে ঝুঁকির মুখে না পড়ে।[][][] গণপ্রজাতন্ত্রী চীন মূল চীন, হেইনান দ্বীপ, হংকং, মাকাও ও অন্যান্য কিছু দক্ষিণ চীন সমুদ্রের দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রতিটি স্থানীয় ব্যুরো অথবা অফিস স্থানীয় নেতার সমান কর্তৃত্বে থাকে। জনগণের কনগ্রেস সদস্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। এদের দায়িত্ব হচ্ছে স্থানীয় সরকারকে নজরে রাখা এবং প্রাদেশিক মহাসভার সদস্য নির্বাচন করা। অন্যদিকে প্রাদেশিক জনসভার কনগ্রেসরা জাতীয় কনগ্রেসের সদস্য নির্বাচন করে, যেটি প্রতিবছর মার্চে বেইজিঙে অনুষ্ঠিত হয়। [] ক্ষমতায় থাকা কম্যুনিস্ট পার্টি প্রতিটা ক্ষেত্রেই বেশ বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।

চীনের রাষ্ট্রপতি নামেমাত্র রাষ্ট্রের প্রধান। চীনের প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারপ্রধান, যিনি চারজন ভাইস প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রণালয় ও কমিশন প্রধান দ্বারা গঠিত স্টেট কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করেন। একদলীয় রাষ্ট্র হিসেবে কম্যুনিস্ট পার্টি অব চায়নার সাধারণ সম্পাদকের হাতেই থাকে প্রকৃত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব।

কমিউনিস্ট পার্টি

[সম্পাদনা]

কম্যুনিস্ট পার্টি অব চায়নার ৮.৯ কোটি সদস্য সরকারকে ডোমিনেট করে থাকে। উদারীকরণের সময়ে, সাংগঠনিক দলগঠনের বাইরে সাধারণ মানুষ ও অন্যান্য গ্রুপের প্রভাব বেড়ে যায়। কমান্ড ইকোনমির অধীনে, প্রত্যাকটি রাষ্ট্র-চালিত এন্টারপ্রাইজেই পার্টি কমিটি থাকা বাধ্যতামূলক ছিলো। বাজার অর্থনিতির শুরু মানে হচ্ছে, এখন এমন অনেক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে রাষ্ট্রের ক্ষমতা সীমিত বা একেবারেই নেই।

তবুও সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচালনার ক্ষেত্রে পার্টি কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অপিস ও শহরের অর্থনৈতিক, শৈল্পিক ও সাংস্কৃতিক সেটিংসে কেন্দ্রীয় পার্টির শক্ত নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যে নিয়ন্ত্রণ স্বাভাবিকভাবেই তুলনামূলক কম। সিপিসি এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব্ব বিবেচনা করা হয় কর্মিবৃন্দ নির্বাচন ও পদোন্নতি করা। তারা এও দেখে যে যাতে পার্টি ও রাষ্ট্রের নীতি মেনে চলা যায়, যাতে সাধারণ মানুষ বা পার্টির বাইরের লোক স্বায়ত্তশাসিত সংগঠন গড়ে তুলতে না পারে, যা পার্টির শাসনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

সাংবিধানিকভাবে পার্টির সর্বোচ্চ অংশ হলো পার্টি কংগ্রেস। এ পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করে এবং কেন্দ্রীয় কমিটির হাতেই ন্যস্ত থাকে প্রাথমিক ক্ষমতা।

কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতার প্রাথমিক অঙ্গ:

  • সাধারণ সম্পাদক, পার্টির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী।
  • পলিটার্বো, ২২জন সদস্য দ্বারা গঠিত, যার মধ্যে পলিটার্বো স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরাও রয়েছে;
  • পলিটার্বো স্ট্যান্ডিং কমিটি, চায়নার সবচেয়ে ক্ষমতাধর সিদ্ধান্ত-গ্রহণকারী অংশ, বর্তমানে যেটি ৭ সদস্য দ্বারা গঠিত;
  • দপ্তর, সিপিসির প্রধান প্রশাসনিক প্রক্রিয়া, যার প্রধান সাধারণ সম্পাদক;
  • কেন্দ্রীয় মিলিটারি কমিশন;
  • কেন্দ্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিশন, যা পার্টি কর্মীদের মধ্যে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

সরকার

[সম্পাদনা]

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্রাথমিক অঙ্গ হলো ন্যাশনাল পিপলস কনগ্রেস বা এনপিসি, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্য পরিষদ। রাজ্য পরিষদের সদস্যবৃন্দের মধ্যে একজন প্রধান, অনির্দিষ্ট সংখ্যক সহকারী প্রধান (বর্তমানে ৪), ৫ জন উপদেষ্টা এবং ২৯ জন মন্ত্রি ও রাজ্য পরিষদ কমিশনের প্রধান রয়েছে। ১৯৮০-এর দশকে দল ও রাজ্যের কার্যপ্রক্রিয়া আলাদা করার একটি প্রচেষ্টা করা হয়েছিলো। ১৯৯০ এর দশকে এসে যা ব্যর্থতায় পর্যাবসিত হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]