বিষয়বস্তুতে চলুন

নিনা ফাশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নিনা ফাশ
Nina Foch
এসকেপ ইন দ্য ফগ (১৯৪৫) ছবিতে ফাশ
জন্ম
নিনা কনসুয়েলো মদ ফখ

(১৯২৪-০৪-২০)২০ এপ্রিল ১৯২৪
মৃত্যু৫ ডিসেম্বর ২০০৮(2008-12-05) (বয়স ৮৪)
মৃত্যুর কারণমায়েলোডিসপ্লাস্টিক সিনড্রোম
পেশাঅভিনেত্রী, অধ্যাপক
কর্মজীবন১৯৪৩–২০০৭
উচ্চতা৫ ফু ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মি)[]
দাম্পত্য সঙ্গীজেমস লিপটন (বি. ১৯৫৪–১৯৫৯)
ডেনিস ডি ব্রিটো (বি. ১৯৫৯–১৯৬৪)
মাইকেল ডিওয়েল (বি. ১৯৬৭–১৯৯৩)
সন্তান

নিনা ফাশ (ইংরেজি: Nina Foch (/nnə.fɑːʃ/); জন্ম: নিনা কনসুয়েলো মদ ফখ; ২০ই এপ্রিল ১৯২৪ - ৫ই ডিসেম্বর ২০০৮)[] ছিলেন একজন ওলন্দাজ মার্কিন অভিনেত্রী। ১৯ বছর বয়সে কলাম্বিয়া পিকচার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর ফাশ এই স্টুডিওর ভীতিপ্রদ ও নোয়া চলচ্চিত্রগুলোতে নিয়মিত কাজ করতে থাকেন। ১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে থেকে ১৯৫০-এর দশকে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।[] ছয় দশক ব্যাপী তার কর্মজীবনে তিনি ৫০টি চলচ্চিত্র এবং ১০০টি টেলিভিশন নাটকে কাজ করেন।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল ভিনসেন্ট মিনেলির অ্যান আমেরিকান ইন প্যারিস (১৯৫১), রবার্ট ওয়াইজের এক্‌জিকিউটিভ সুয়িট (১৯৫৪), সেসিল বি. ডামিলের দ্য টেন কমান্ডমেন্টস (১৯৫৬) এবং স্ট্যানলি কুবরিকের স্পার্টাকাস (১৯৬০)। এক্‌জিকিউটিভ সুয়িট ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

ফাশ ১৯৫১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত অসংখ্য টেলিভিশন নাটকে কাজ করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি ফাশ আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটে এবং সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে পাঠদান করতেন। তিনি সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ৪০ বছর অধ্যাপনা করেন।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

নিনা ফাশ ১৯২৪ সালের ২০শে এপ্রিল নেদারল্যান্ডসের জুইদ-হল্যান্ডের লাইডেনে জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মনাম নিনা কনসুয়েলো মদ ফক।[] তার পিতা ডার্ক ফক ছিলেন ওলন্দাজ ধ্রুপদী সঙ্গীত নির্দেশক এবং মাতা কনসুয়েলো ফ্লোয়ার্টন ছিলেন মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা।[] তার শিশু অবস্থায় তার পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তিনি তার মায়ের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং নিউ ইয়র্ক সিটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।[] ফাশ বেড়ে ওঠতে থাকলে তার মাতা তার শৈল্পিক প্রতিভায় উৎসাহ দেন। তিনি পিয়ানো বাজানো শিখেন এবং চিত্রাঙ্কন পছন্দ করতেন, কিন্তু অভিনয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন।[] লিংকন স্কুল থেকে পাস করার পর ফাশ আমেরিকান একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টসে ভর্তি হন এবং লি স্ট্রাসবার্গ ও স্টেলা অ্যাডলারের নিকট থেকে পদ্ধতিগত অভিনয়ের কৌশল লব্ধ করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

ফাশ ১৯৫১ সালে ভিনসেন্ট মিনেলির সঙ্গীতধর্মী অ্যান আমেরিকান ইন প্যারিস চলচ্চিত্রে জিন কেলির বিপরীতে অভিনয় করেন। ছবিটি সেবছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কার অর্জন করে। পরের বছর তিনি স্ক্যারামশ (১৯৫২) চলচ্চিত্রে মারি অঁতোইনেত চরিত্রে অভিনয় করেন। ফাশ বোর্ডরুম নাট্যধর্মী রবার্ট ওয়াইজের এক্‌জিকিউটিভ সুয়িট (১৯৫৪) ছবিতে উইলিয়াম হোল্ডেন, ফ্রেড্রিক মার্চবারবারা স্ট্যানউইকের সাথে অভিনয় করেন। তিনি তার কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[] তিনি সেসিল বি. ডামিলের দ্য টেন কমান্ডমেন্টস (১৯৫৬) চলচ্চিত্রে ফ্যারাউয়ের কন্যা বিথিয়া চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি শিশু মোজেসকে ঝোপের আড়ালে খুঁজে পান এবং তাকে তার সন্তান হিসেবে দত্তক নেন। ১৯৫৭ সালে ফাশ দ্য টেন কমান্ডমেন্টস ছবিতে তার কাজের জন্য আমেরিকান জিউইশ কংগ্রেসের ম্যারিল্যান্ড স্টেট কাউন্সিল থেকে একটি বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন।[]

১৯৬০ সালে তিনি স্ট্যানলি কুবরিকের স্পার্টাকাস চলচ্চিত্রে কার্ক ডগলাসলরন্স অলিভিয়ের সাথে অভিনয় করেন। এতে তিনি বিনোদনের উদ্দেশ্যে গ্ল্যাডিয়েটরদের যুদ্ধের জন্য নির্বাচন করেন এমন এক নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। পরের বছর তাকে এনিবিসির ধারাবাহিক দি আমেরিকান্স-এ অতিথি চরিত্রে দেখা যায়। ১৯৬৩ সালে তাকে এনবিসির ক্রীড়া অনুষ্ঠান ইওর ফার্স্ট ইম্প্রেশন-এ দেখা যায়। ১৯৬৪ সালে তিনি সিবিএসের নাট্যধর্মী ধারাবাহিক মিস্টার ব্রডওয়ে-এর "ম্যাগি, কুইন অব দ্য জাঙ্গল" পর্বে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ফাশ ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে বসবাস করতেন। তিনি তিনবার বিয়ে করেন। তিনি প্রথমবার জেমস লিপ্টনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি পরবর্তী কালে ইনসাইড দি অ্যাক্টরস স্টুডিও-এর উপস্থাপক ছিলেন। তার দ্বিতীয় বিবাহ হয় ১৯৫৯ সালে ডেনিস ডি ব্রিটোর সাথে। তাদের এক সন্তান ডার্ক ডি ব্রিটো। ১৯৬৩ সালে ডেনিসের সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ১৯৬৭ সালে তিনি মাইকেল ডিওয়েলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৯৩ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

ফাশ ২০০৮ সালের ৫ই ডিসেম্বর ৮৪ বছর বয়সে রোনাল্ড রেগন ইউসিএলএ মেডিক্যাল সেন্টারে মৃত্যুবরণ করেন। তার একমাত্র পুত্র ডার্ক ডি ব্রিটো লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে জানান যে তিনি মায়েলোডিস্প্লাসিয়া রোগের আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর আগের দিন তিনি ইউএসসি স্কুল অব সিনেম্যাটিক আর্টসের শিক্ষাদানরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।[১০] ফাশের মরদেহ ক্যালিফোর্নিয়ার নেপচুন সোসাইটি অব শেরমান ওকসে দাহ করা হয় এবং তার ভস্ম তার পুত্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।[১১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. লোবিয়াঙ্কো, লরাইন। "Starring Nina Foch: 10-22"টার্নার ক্লাসিক মুভিজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. উ, এলাইন (৬ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Nina Foch, actress and influential coach and teacher, dies at 84" (ইংরেজি ভাষায়)। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৮ 
  3. গেটস, আনিটা (৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Nina Foch, Actress in Sophisticated Roles, Dies at 84"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৮ 
  4. বার্গেন, রোনাল্ড (৬ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Obituary: Nina Foch"দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৮ 
  5. "Nina Foch: Oscar-nominated actress with a long career in film and TV"দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ ডিসেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৯ 
  6. "Nina Foch Biography (1924-)"ফিল্ম রেফারেন্স (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৮ 
  7. "Nina Foch"দ্য টেলিগ্রাফ (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৮ 
  8. বার্নস্টাইন, অ্যাডাম (১২ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Nina Foch; 'Executive Suite' Role Earned Actress Oscar Nomination"ওয়াশিংটন পোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৮ 
  9. "DeMille Honored For Bible Movie"স্পোকেন ডেইলি ক্রনিকল (ইংরেজি ভাষায়)। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস। ১৯ মার্চ ১৯৫৭। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৯ – গুগুওল নিউজ-এর মাধ্যমে। 
  10. উ, এলাইন (৭ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Nina Foch, actress and influential acting teacher, dies at 84"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৯ 
  11. উইলসন, স্কট (২০১৬)। Resting Places: The Burial Sites of More Than 14,000 Famous Persons, 3d ed. (ইংরেজি ভাষায়)। ম্যাকফারল্যান্ড। পৃষ্ঠা ২৪৮। আইএসবিএন 9781476625997। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]