অসম দিবস
অসম দিবস | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | চুকাফা (ছ্যু-কা-ফা) দিবস |
শুরু | ২ ডিসেম্বর ১৯৯৬ |
অসম দিবস হচ্ছে আহোম সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চুকাফার স্মৃতিকল্পে অসমে পালিত উৎসব। ১২২৮ সনের ২ ডিসেম্বর তারিখে চুকাফা পাটকাই পর্বত অতিক্রম করে অসমে প্রবেশ করে আহোম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন বলে এই দিনটি চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য অসমে অসম দিবস পালিত হয়। ছৈখোয়া অঞ্চলের ভীমকান্ত বুঢ়াগোহাই নামক এক ব্যক্তির প্রচেষ্টার ফলে অসমে চুকাফা দিবসের সূচনা হয়।[১]
অসম দিবসের উৎপত্তি
[সম্পাদনা]১৯৭২ সনে ছৈখোয়া অঞ্চলের সমাজকর্মী ভীমকান্ত বুঢ়াগোহাই ২ডিসেম্বর তারিখে চুকাফা দিবস উৎযাপনের উদ্দেশ্য বিষয়টি শদিয়ার মৌজাদার ও শদিয়ার আঞ্চলিক ছাত্রসন্থার সহিত আলোচনা করে ও সকলের অণুমতিতে নগাঁওয়ে রাজগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চ্যুকাফা দিবস উৎযাপন করেন। ১৯৭৩ সনে একই স্থানে চুকাফা দিবস উৎযাপন করা হয় যদিও ১৯৭৪ সনে ধুমধামের সহিত চুকাফা দিবস উৎযাপিত হয়। ভীমকান্ত বুঢ়াগোহাই ও শদিয়ার মৌজাদার ও ইতিহাসবিদ ভবানন্দ বুঢ়াগোহাইয়ের অনুষ্ঠিত সভায় সরকারী-বেসরকারী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহযোগ করে। সভাটির উদ্ধোধক ছিলেন অসম সাহিত্য সভার সভাপতি মহেন্দ্র বরা। নির্দিষ্ট বক্তা ছিলেন ড: নগেন শইকীয়া ও সভাপতি ছিলেন লীলা গগৈ। বক্তৃতা প্রসঙ্গে ড: লীলা গগৈ ২ডিসেম্বর তারিখ সরকারি বন্ধ ঘোষণা করার দাবী জানানোর জন্য প্রস্তাব করেন। ১৯৮১ সনে শিবসাগরের চরাইদেউ নামক স্থানে চুকাফা দিবস উৎযাপন করা হয় ও সেই সময় থেকে অনেক কয়েকটি জাতীয় সংগঠন ২ডিসেম্বর তারিখটি চুকাফা দিবস হিসেবে পালন করার জন্য দাবী জানান। ১৯৮৭ সনে ড: লীলা গগৈ, পদ্ম বরকটকী ও ধ্রুবজ্যোতি বরা ১ মার্চের আজির সময় নামক অসমীয়া খবরের কাগজে চুকাফা দিবসের সমন্ধে মন্তব্য তুলে ধরেন। সেই বৎসরে ২ডিসেম্বর তারিখে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় জজ খেলপথার নামক মাঠে চুকাফা দিবসের আয়োজন করা হয়। সেখানে মুখ্য অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করা অসমের মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ত চুকাফা দিবসকে অসম দিবস হিসেবে সরকারী স্বীকৃতি প্রদান করেন[১]।
চ্যুকাফার আদর্শ
[সম্পাদনা]চীনের য়ুনান প্রদেশের মাওলুং রাজ্যের টাই আহোম ফৈদের যুবরাজ চাওলুং চুকাফা ১২১৫ সনে আঠজন বিজ্ঞ বিষয়া, ৯০০০ জন যুবক-যুবতী, ছেলে-মেয়ে, দুইটি হাতি ও ৩০০টি ঘোড়া নিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় যাত্রা করেন[২] ও ১২২৮ সনে সৌমার খণ্ডে প্রবেশ করেন। যুদ্ধ-বিগ্রহ না করেই তিনি ব্রহ্মপুত্রের আশে-পাশে থাকা ছোট ছোট জনগোষ্ঠীকে একত্রিত করে অসম ও অসমীয়া জাতি গঠন করেন। তিনি সকলের সহিত মিত্রতা বজায় রেখে নিজের ভাষা টাই ও নিজের ধর্ম তাও ত্যাগ করে সকল জনগোষ্ঠীর লোকের সহিত সম্পর্ক স্থাপন করে নতুন ভাষা গঠনে অবদান রেখেছিলেন। তার মহৎ আদর্শ গ্রহণ করে আহোমেরা প্রায় ৬০০ বৎসর অসমের রাজত্ব করেছিলেন। চুকাফা প্রথম অসমে ইতিহাস চর্চার পরম্পরা আরম্ভ করেছিলেন।[২]