ঋ (আধ্বব: /ri/) হলো বাংলা লিপির সপ্তম স্বরবর্ণ এবং ৭ম বর্ণ। বাংলা লিপিতে স্বরবর্ণের সংখ্যা মোট ১১টি; তার মধ্যে পূর্ণমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ ৬টি, অর্ধমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ ১টি এবং মাত্রা ছাড়া স্বরবর্ণ ৪টি। ‘ঋ’ হলো একমাত্র অর্ধমাত্রাযুক্ত স্বরবর্ণ।
"ঋ" কে প্রথাগতভাবে মূর্ধন্য ধ্বনি বলা হয়। কারণ সংস্কৃতে এর উচ্চারণ মূর্ধা থেকে হতো এবং এটি স্বরধ্বনি ছিল। তবে বর্ণটি বাংলাতেসংস্কৃতের কোনো বৈশিষ্ট্যকেই অক্ষুণ্ন রাখেনি।এটি না স্বরধ্বনি না মূর্ধন্য ধ্বনি।বাংলায় এর উচ্চারণ "রি" অথবা "রী" এর মতো।অন্য বর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এটি র-ফলার মতো উচ্চারিত হয়।[১] তেমন:হৃদয় (উচ্চারণ:হ্রিদয়), আদৃত (উচ্চারণ: আদ্রিতো), দৃশ্য (উচ্চারণ:দ্রিশ্-শো)
মৈথিলী ভাষা বাংলা ও কৈথী উভয় লিপি ব্যবহার করে লিখা হয়। তবে মৈথিলী ভাষার বাংলা লিপিতে ‘ঋ’ (রি) এর রূপ অন্য রকম হয় এবং এর উচ্চারণও ভিন্ন। বাংলা-ভিত্তিক মৈথিলী লিপিতে- এভাবে ‘ঋ’ লিখা হয় এবং এর উচ্চারণ /r̩/।
সংস্কৃত বর্ণক্রম অনুসারে ঋ এর পরবর্তী অক্ষরগুলো হলো ৠ (দীর্ঘ রি), ঌ (হ্রস লি), ৡ (দীর্ঘ লি)। এই ধারাবাহিকতায় পূর্ববর্তী ‘ঋ’ বর্ণটিকে "হ্রস রি" নামে ডাকা হতো। উনবিংশ শতকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক বাংলা বর্ণমালারসংস্কারের পর উক্ত তিনটি বর্ণকে বাদ দেওয়া হয়, কারণ এই বর্ণগুলোর প্রকৃত উচ্চারণ সংস্কৃত ভাষায় মূলত পাওয়া যেত, বাংলা বর্ণমালায় বর্ণগুলোর উচ্চারণ ব্যঞ্জনবর্ণ র ও ল এর অনুরূপ। বাংলা, অসমীয়া ভাষায় ব্যবহার না হলেও অনুরূপ বর্ণ মৈথিলী ভাষাতে ব্যবহার করা হয়।
তবে বিদ্যাসাগরীয় সংস্কারের পর আধুনিক বর্ণমালায় ঋ এর পরবর্তী বর্ণ হচ্ছে এ।