সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংসদ সদস্য | |
---|---|
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৬ জুলাই ২০১৫ – ৩ জানুয়ারি ২০১৯ | |
প্রধানমন্ত্রী | শেখ হাসিনা |
সংসদীয় এলাকা | কিশোরগঞ্জ-১ |
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় | |
কাজের মেয়াদ ৬ জানুয়ারি, ২০০৯ – ৯ জুলাই ২০১৫ | |
প্রধানমন্ত্রী | শেখ হাসিনা |
উত্তরসূরী | খন্দকার মোশাররফ হোসেন |
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক | |
কাজের মেয়াদ ২০০৯ – ২৩ অক্টোবর ২০১৬ | |
পূর্বসূরী | আব্দুল জলিল |
উত্তরসূরী | ওবায়দুল কাদের |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ময়মনসিংহ, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ১ জানুয়ারি ১৯৫২
মৃত্যু | ৩ জানুয়ারি ২০১৯ ব্যাংকক, থাইল্যান্ড | (বয়স ৬৭)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | শীলা ঠাকুর |
সম্পর্ক | সৈয়দ-উজ-জামান (মামা) জাকিয়া নূর লিপি (বোন) সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলাম (ভাই) |
পিতা | সৈয়দ নজরুল ইসলাম |
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (১ জানুয়ারি ১৯৫২ - ৩ জানুয়ারি ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ষষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ-৩ আসন থেকে সপ্তম ও অষ্টম, কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। এর পূর্বে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।[১]
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১লা জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতা বাংলাদেশের মুজিবনগর অস্থায়ী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আশরাফুল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[৩]
কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সাথে আশরাফুলের পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল। পিতার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফুল যুক্তরাজ্যে চলে যান[৪] এবং লন্ডনের হ্যামলেট টাওয়ারে বসবাস শুরু করেন। লন্ডনে বসবাস কালে তিনি বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। সেসময় তিনি লন্ডনস্থ যুবলীগের সদস্য ছিলেন। আশরাফুল ফেডারেশন অব বাংলাদেশী ইয়ুথ অর্গানাইজেশন (এফবিওয়াইইউ) এর শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে আশরাফুল দেশে ফিরে আসেন এবং জুন ১৯৯৬ সালের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৪] এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ২০০১ সালে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। যখন আব্দুল জলিল গ্রেপ্তার হন, তখন সৈয়দ আশরাফুল আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পুনরায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। ২০১৫ সালের ৯ জুলাই তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করেন। এক সপ্তাহ দপ্তরবিহীন মন্ত্রী থাকার পর ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী নিজের অধীনে রাখা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন।[৫]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ আশরাফুল ব্রিটিশ ভারতীয় সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারের শীলা ঠাকুরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। শীলা লন্ডনে শিক্ষকতা করতেন এবং ২৩ অক্টোবর ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আশরাফুল-শীলা দম্পতির একমাত্র মেয়ে রীমা ঠাকুর, যিনি লন্ডনের এইচএসবিসি ব্যাংকে চাকরি করেন।[৬]
অসুস্থতা ও মৃত্যু
[সম্পাদনা]২৪ অক্টোবর ২০১৭ সালে সৈয়দ আশরাফুলের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি প্রায়ই অসুস্থ হন।[৬] তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। নভেম্বর ২০১৮ সালে তার ফুসফুসের ক্যান্সার ৪র্থ ধাপে পৌঁছে।[৭] ২০১৯ সালের ৩রা জানুয়ারি থাইল্যান্ডের ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।[৮] ৬ জানুয়ারি ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর নেই"। দৈনিক ইত্তেফাক। ৩ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "হলফনামা" (পিডিএফ)। নির্বাচন কমিশন। ৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "এক নজরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম"। www.jugantor.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০৩।
- ↑ ক খ "Ministry of Public Administration (MOPA)"। www.mopa.gov.bd। ২৮ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জনপ্রশাসন মন্ত্রী হলেন সৈয়দ আশরাফ"। মানবজমিন। ১৭ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ "অসুস্থ সৈয়দ আশরাফ, চিনতে পারছেন না প্রিয়জনদেরও"। প্রিয়.কম। ১২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "মেয়েকেও চিনতে পারছেন না সৈয়দ আশরাফ"। একুশে টেলিভিশন। ৫ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর নেই"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ৩ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "বনানীতে চিরনিদ্রায় সৈয়দ আশরাফ"। bdnews24.com। ৬ জানুয়ারি ২০১৯। ৬ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৯।
- ১৯৫২-এ জন্ম
- ২০১৯-এ মৃত্যু
- কিশোরগঞ্জ জেলার রাজনীতিবিদ
- ময়মনসিংহ জেলার রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
- সপ্তম জাতীয় সংসদ সদস্য
- অষ্টম জাতীয় সংসদ সদস্য
- নবম জাতীয় সংসদ সদস্য
- দশম জাতীয় সংসদ সদস্য
- একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য
- শেখ হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভার সদস্য
- শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভার সদস্য
- ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যু
- মুক্তিবাহিনীর কর্মকর্তা
- বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
- বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তি
- কিশোরগঞ্জ জেলার ব্যক্তি
- আরব বংশোদ্ভূত বাংলাদেশী ব্যক্তি
- বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সন্তান