হেলেনা খান
হেলেনা খান | |
---|---|
জন্ম | ২৩ মার্চ ১৯২৩ |
মৃত্যু | ১৫ মার্চ ২০১৯ আটলান্টা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৯৫)
পেশা | গল্পকার, ঔপন্যাসিক, অনুবাদক |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র |
ধরন | শিশুসাহিত্য |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি |
|
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি পুরস্কার একুশে পদক |
হেলেনা খান (২৩ মার্চ ১৯২৩ – ১৫ মার্চ ২০১৯) একজন বাংলাদেশী শিশু সাহিত্যিক, গল্পকার, অনুবাদক ও ঔপন্যাসিক ছিলেন।[১] তিনি পঞ্চাশের অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০০৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।[২] বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১০ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক-এ ভূষিত হন।[৩]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]হেলেনা খান ১৯২৩ সালের ২৩শে মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানাধীন কলতাপাড়া গ্রামে। তার মাতা খাতেমুন নেসা এবং পিতা মুজাফফর আলী ফকির। মাত্র নয়মাস বয়সে তার মাতা মারা যাওয়ার পর তিনি তার মাতামহীর কাছে লালিত পালিত হন।[৪]
তিনি রাধা সুন্দরী বালিকা বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। পরে তিনি ১৯৪৮ সালে কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন এবং ১৯৪৯ সালে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ব্যাচেলর ইন ট্রেনিং সম্পন্ন করেন। তিনি এই কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি লন্ডন গমন করেন এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১-১৯৫২ সালে যথাক্রমে শিক্ষা ও ইংরেজি বিষয়ে দুটি ডিপ্লোমা অর্জন করেন।[৪]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]হেলেনা খান ১৯৪৯ সালে তার শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। তিনি চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রংপুরের বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি ১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ সরকারী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তিনি শিক্ষাদান থেকে অবসরে যান।[৪]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]হেলেনা খান ১৯৫০ সালে আজিজুর রহমান খানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের তিন পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে। আজিজুর রহমান ১৯৯২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তখন থেকে হেলেনা খান উত্তর আমেরিকায় তার সন্তানদের কাছে থাকতেন। ২০০৪ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন, তবে তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্বও ধরে রাখেন।[৪]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]তিনি ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ৯১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার পিডমন্ট হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৫][৬] তাকে লরেন্সভিলের মুসলিম সেমেটারিতে সমাহিত করা হয়।[৪]
গ্রন্থতালিকা
[সম্পাদনা]শিশুসাহিত্য
- তুলতুলের দান
- নীল পাহাড়ের হাতছানি
- রূপকথার রাজ্যে
- ভূতের খপ্পরে
- মজার মজার গল্পগুলো
- সাতটি রঙের রংধনু
- কারামুক্তি (২০১০)[৭]
- চারটি বেলুন[৮]
- বুদ্ধির বাহাদুরী (২০১১)[৯]
- ছোট্ট রেড রাইডিং হুড
- লেভী রাজা লোভী রানী
- শাবানা বাহাদুর
- ব্যাংককের সেই মেয়েটি
- রাজার আজব পোশাক
- ছোটদের সেরাগল্প
- কিশোর রচনাসমগ্র
- ঝিলিমিলি (রঙিন)
- গল্প পড়া ভারি মজা
- তুষারকুমারী ও সাতবামন
গল্প
- বৃত্তের বাইরে
- পান্নার জন্য
- প্রবাসে সায়ংকালে
- পাপড়ির রং বদলায়
- নির্বাচিত গল্প
প্রবন্ধ
- আমার পরিচিতি বৃহত্তম ময়মসিংহের কয়েকজন বিশিষ্ট নারী
- আমার স্মৃতিতে ভাস্বর
- ঊষা থেকে গোধূলির স্মৃতি
উপন্যাস
- লেখনী
- শ্বাপদসংকুল অরণ্যে
- দুই ধাপ পৃথিবী
- আত্মজা ও মুক্তিযুদ্ধ
অনুবাদ
- মাঞ্চ-এর মজার গল্প
- হ্যানসেল এ্যান্ড গ্রেটেল
জীবনী
- নবী আদম
- নবী নূহ
- নবী ইউনুস (আ:)
- ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার প্রতীক : নবী আইয়ু্ব
- নবী ইবরাহীম
- আমাদের মহানবী মুহাম্মদ (সা.)
- ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন হযরত বেলাল (রা:)
মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনৈতিক
- মুক্তিযুদ্ধের গল্প
- একাত্তরের কাহিনী
ভ্রমণকাহিনী
- নতুন দেশ নতুন মানুষ
- স্বপ্নের দেশ নবীর দেশ
- সিন্ধুর টিপ সিংহল দ্বীপ
- গৌতমবুদ্ধের দেশে
পুরস্কার ও সম্মাননা
[সম্পাদনা]- নুরুন্নেসা খাতুন বিদ্যাবিনোদিনী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৬)
- বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কার (২০০১)
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার (২০০৮)[১০]
- একুশে পদক (২০১০)[১১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "আমাদের সাহিত্য জগৎ"। যায়যায়দিন। ঢাকা, বাংলাদেশ। জুন ১১, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ আমেনা খাতুন (ফেব্রুয়ারি ২০, ২০০৯)। "New writers unhappy over sales"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "১৫ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব একুশে পদক পেলেন"। দৈনিক প্রথম আলো। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ সুফি, অয়ন (১৭ মে ২০১৯)। "Helena Khan: The demise of a literary star"। ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Novelist Helena Khan passes away"। ঢাকা ট্রিবিউন। ১৬ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "Helena Khan passes away"। দ্য ডেইলি স্টার। ১৬ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "বইয়ের মেলা প্রাণের মেলা - শেষ শুক্রবারে সকাল-সন্ধ্যা ভিড়"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ২৪ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "নতুন বই ২২৭৩টি, কবিতার বই এগিয়ে"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ঢাকা, বাংলাদেশ। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "একুশে মেলায় বইয়ের মোড়ক উন্মোচন"। দৈনিক সংগ্রাম। ঢাকা, বাংলাদেশ। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ আমেনা খাতুন (ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০০৯)। "Three writers receive Bangla Academy awards"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "15 named for Ekushey Padak-2010"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা, বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ১৯২৩-এ জন্ম
- ২০১৯-এ মৃত্যু
- ২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক
- বাংলাদেশী অনুবাদক
- বাংলাদেশী নারী ঔপন্যাসিক
- বাংলাদেশী ছোটগল্পকার
- শিশুসাহিত্যে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
- ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক বিজয়ী
- বাংলাদেশী লেখিকা
- বাংলা ভাষার লেখক
- বাংলাদেশী নারী শিক্ষায়তনিক ব্যক্তি
- বাঙালি লেখক
- আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক
- ১৯২৭-এ জন্ম
- একুশে পদক বিজয়ী
- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
- লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী